কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের সেবার নামে স্থানীয়রা বাস্তহারা!

কক্সবাজারে উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের সেবার নামে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে বাস্তহারা করার অভিযোগ উঠেছে৷ জানায়ায ফসলি ও ক্ষেত খামারের জায়গা কেড়ে নিয়ে সেবা প্রদানকারী সংস্থা সমূহ জোরপূর্বক অফিস ও ব্যারাক নির্মাণ করছে। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে গ্রামবাসীরা।

অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিন গিয়ে জানা যায় উপজেলার পালংখালী ৪ নম্বর ওয়ার্ডের থাইংখালী তাজনীমার খোলার ঘোনার পাড়া হচ্ছে ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের বেড়ার ভিতর অসংখ্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বসতবাড়ি সহ জায়গা জমি রয়েছে। এদিকে ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠী তাদের সহায় সম্বলটুকু রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয় ক্যাম্প ইনচার্জ এবং এপিবিএন পুলিশের নিকট দফায় দফায় দ্বারস্থ হলেও চতুর্মুখী রশি টানাটানিতে কোন সুরাহা পাচ্ছে না৷ বলতে গেলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর আহাজারিতে দিন দিন কান্না ভারি হচ্ছে।

ওই এলাকার মৃত মেহের আলীর পুত্র আবুল হাসেম মৃত গোলাম হোসেনের পুত্র হাজী নুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমাদের জোত ও খতিয়ানভুক্ত জায়গা জোরপূর্বক জবরদখল করে ৮ এপিবিএন পুলিশের অফিস এবং ব্যারাক নির্মাণের কাজ শুরু করে৷ বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে উল্টো হুমকি-ধমকি দিয়ে আমাদেরকে জিম্মি করে রাখে। বিষয়টি সুরাহা করার জন্য শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সহ স্থানীয় প্রশাসন বরাবরে লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোনো সুরাহা করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর। তিনি আরও বলেন, আমাদের জায়গায় মাটি ভরাট করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে।

এবিষয়ে পালংখালী অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসেন বলেন, জোত ও খতিয়ানভুক্ত জায়গা জোরপূর্বক জবরদখল করে ৮ এপিবিএন পুলিশের অফিস এবং ব্যারাক নির্মাণের কাজ শুরু করেছে, ধ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয়দের জায়গা বুঝয়ে না দিয়ে কুটোর আন্দোলন করা হবে৷ পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে অসংখ্য স্থানীয় জনগোষ্ঠী নিজ জায়গা ও বসতবাড়ি হারিয়ে বাস্তহারা হচ্ছে। উখিয়ার ক্যাম্পে দায়িত্বরত ৮ এপিবিএন-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মোঃ কামরান হোসেনের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অনেক আগের বিষয়। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের মাধ্যমে জায়গার বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ১৯নং ক্যাম্পের স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীকে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা জানান, বিষয়টি চেক জানানো হবে বলে এডিয়ে যান৷ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী পরিবারের জোত ও ফসলি জায়গায় বিনা নোটিশে জবর দখল করে অফিস ও ব্যারাক নির্মাণ করা খুবই দুঃখজনক। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় গ্রহণ করে। যাদের বেশিরভাগই কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ ক্যাম্পে বসবাস করে। এই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে জমি-জায়গা হারিয়েছে স্থানীয়রা৷

পাঠকের মতামত: